Digital Online Cumilla Technology ভিয়েতনামে টেলিগ্রাম অ্যাপ নিষিদ্ধ

ভিয়েতনামে টেলিগ্রাম অ্যাপ নিষিদ্ধ



ভিয়েতনাম সরকার সম্প্রতি টেলিগ্রাম অ্যাপ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পদক্ষেপের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে, যা মূলত জাতীয় নিরাপত্তা, সাইবার অপরাধ, এবং রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের সাথে সম্পর্কিত। নিচে এই নিষেধাজ্ঞার বিস্তারিত ব্যাখ্যা এবং কারণগুলো পয়েন্ট আকারে উপস্থাপন করা হলো:

📌 টেলিগ্রাম নিষিদ্ধের মূল কারণসমূহ

১. অপরাধমূলক কার্যক্রমের বিস্তার

ভিয়েতনামের প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ৯,৬০০ টেলিগ্রাম চ্যানেল ও গ্রুপের মধ্যে ৬৮% অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত। এই কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতারণা, মাদক পাচার, এবং সন্ত্রাসবাদের সন্দেহভাজন কর্মকাণ্ড।

২. সাইবার অপরাধের জন্য প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার

টেলিগ্রাম তার কঠোর মডারেশন না থাকার কারণে সাইবার অপরাধীদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। এখানে প্রতারণামূলক চাকরির বিজ্ঞাপন, জাল ডকুমেন্ট তৈরি, এবং অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মতো কার্যক্রম চালানো হয়।

৩. রাজনৈতিক বিরোধী গোষ্ঠীর কার্যক্রম

ভিয়েতনামের পুলিশ জানিয়েছে যে, টেলিগ্রামে অনেক বড় গ্রুপ তৈরি হয়েছে যেখানে সরকারবিরোধী দলগুলো রাষ্ট্রবিরোধী নথি ছড়াচ্ছে। এই প্ল্যাটফর্মটি সরকারবিরোধী প্রচারণা চালানোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।

৪. আইনগত অনুপালন ও সহযোগিতার অভাব

ভিয়েতনামের সাইবার নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে অবৈধ কনটেন্ট পর্যবেক্ষণ ও অপসারণ করতে হয়। তবে, টেলিগ্রাম এই নিয়ম মেনে চলেনি এবং সরকারের অনুরোধে ব্যবহারকারীর তথ্য শেয়ার করেনি।

৫. ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষা ও গোপনীয়তা

টেলিগ্রাম ব্যবহারকারীদের পরিচয় যাচাই ছাড়াই নাম পরিবর্তন এবং চ্যাট মুছে ফেলার সুবিধা দেয়, যা প্রতারকদের জন্য সুবিধাজনক। এই কারণে, ভিয়েতনামের সরকার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে।

৬. স্থানীয় আইন ও নিয়ন্ত্রণের অভাব

টেলিগ্রাম ভিয়েতনামে কোনো স্থানীয় অফিস বা প্রতিনিধিত্ব না থাকায়, এটি স্থানীয় আইন ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। এই কারণে সরকার প্ল্যাটফর্মটির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

📅 সাম্প্রতিক পদক্ষেপ ও প্রতিক্রিয়া

  • ২০২৫ সালের ২১ মে, ভিয়েতনামের প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় টেলিকম অপারেটরদের টেলিগ্রাম ব্লক করার নির্দেশ দেয় এবং ২ জুনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলে।

  • টেলিগ্রাম এই সিদ্ধান্তে “অবাক” হয়েছে বলে জানিয়েছে এবং বলেছে যে তারা সরকারের আইনি অনুরোধের জবাব দিয়েছে।

  • এই নিষেধাজ্ঞার সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ভিয়েতনাম সফরও উল্লেখযোগ্য, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নজর কেড়েছে।

🔍 সারাংশ

ভিয়েতনামে টেলিগ্রাম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত মূলত জাতীয় নিরাপত্তা, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। প্ল্যাটফর্মটির গোপনীয়তা ও নিয়ন্ত্রণের অভাবের কারণে এটি অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, যা সরকারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.