জ্যামাইকায় দিবা-রাত্রির টেস্টের তৃতীয় দিনে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ইতিহাস গড়লেন মিচেল স্টার্ক। শততম টেস্ট খেলতে নেমে মাত্র ৯ রান খরচায় ৬ উইকেট শিকার করেন এই অস্ট্রেলিয়ান পেসার। স্টার্কের বিধ্বংসী স্পেলে এবং পরে বোল্যান্ডের হ্যাটট্রিকে মাত্র ২৭ রানে অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ২০৪ রানের লক্ষ্য দিয়েও অস্ট্রেলিয়া সহজেই জয় পায় ১৭৬ রানের ব্যবধানে।
টেস্ট ইতিহাসে এর চেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড আছে শুধু একটিই। ১৯৫৫ সালে মাত্র ২৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সেই লজ্জার রেকর্ডে এক রানের ব্যবধানে দ্বিতীয় স্থানে থাকল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজের আগের দুই টেস্টেও হারতে হয়েছিল ক্যারিবীয়দের, যথাক্রমে ১৫৯ ও ১৩৩ রানে। ফলে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র শুরু করল অস্ট্রেলিয়া।
ম্যাচের তৃতীয় দিনে স্টার্ক শুরুতেই ধস নামান। নিজের প্রথম ১৫ বলেই ৫ উইকেট তুলে নিয়ে গড়েন দ্রুততম ফাইফারের রেকর্ড। আগে এই রেকর্ড ছিল ১৯ বলে আর্নি টোসাক, স্টুয়ার্ট ব্রড ও স্কট বোল্যান্ডের যৌথভাবে। সব মিলিয়ে ৭.৩ ওভারে ৯ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন স্টার্ক। গোলাপি বলের টেস্টে আগেই সবার সেরা ছিলেন তিনি। এবার ২৭ ইনিংসে তার উইকেট সংখ্যা দাঁড়াল ৮১, যেখানে কারও নেই এমনকি ৫০ উইকেটও। গোলাপি বলের টেস্টে পাঁচবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তিও একমাত্র তার।
অন্যদিকে, বোল্যান্ড নিজের প্রথম তিন বলেই তিন উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করেন। পিটার সিডলের পর তিনিই প্রথম অস্ট্রেলিয়ান, যিনি টেস্টে হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেলেন। এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাত ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন শূন্য রানে, যা টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবার কোনো ইনিংসে ঘটল।
ম্যাচে প্রথম ওভারেই তিন উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্টার্কের সেই ওভারে কোনো রান নিতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। পরের ওভারগুলোতেও স্টার্ক ও হ্যাজলউডের আঘাতে ৭ রানে ৫ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এরপর বোল্যান্ডের হ্যাটট্রিক তাদের ইনিংসকে আরও ত্বরান্বিতভাবে শেষ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত স্টার্কই শেষ উইকেটটি নেন, ফলে ২৭ রানে থামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।
৪০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করার দিনেই এমন অবিস্মরণীয় বোলিংয়ে রেকর্ড বইয়ে নিজের নাম উজ্জ্বল করে রাখলেন মিচেল স্টার্ক।