সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর দ্বিতীয় সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। বুধবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীর স্বাক্ষরে এ অধ্যাদেশ জারি হয়।
নতুন অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী যদি আন্দোলনে যান বা অন্য কোনো কর্মচারীকে কাজে উপস্থিত হতে বাধা দেন, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এ শাস্তির মধ্যে রয়েছে বাধ্যতামূলক অবসর, নিম্নপদে অবনমন এবং চাকরি থেকে বরখাস্তের ব্যবস্থা।
আইনজীবীদের মতে, যদিও অধ্যাদেশে সরাসরি ‘আন্দোলন’ শব্দটি উল্লেখ নেই, তবে এর ধারাগুলো থেকে স্পষ্টভাবে আন্দোলন বা ধর্মঘটকে বোঝানো হয়েছে। সাধারণত কর্মবিরতি বা আন্দোলনের সময় সরকারি কর্মচারীরা একে অপরকে কাজে না যেতে উৎসাহিত করে, যা এই নতুন অধ্যাদেশে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
অধ্যাদেশে স্পষ্ট করা হয়েছে, কোনো কর্মচারী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করলে, আইনগত কারণ ছাড়া সরকারের কোনো নির্দেশনা কার্যকর না করলে বা অন্যকে তা না করতে উৎসাহিত করলে, অথবা ছুটি বা যৌক্তিক কারণ ছাড়া একসঙ্গে কর্মবিরতিতে গেলে, তাকে সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টির দায়ে অভিযুক্ত করা হবে। এমন অপরাধ প্রমাণিত হলে নিম্নপদে অবনমন, বাধ্যতামূলক অবসর, কিংবা চাকরিচ্যুতির শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে হবে এবং চাইলে শুনানিতে অংশ নেওয়ার সুযোগও থাকবে।
এছাড়া বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আপিল করা যাবে না। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি প্রয়োজন মনে করলে যথাযথ আদেশ দেবেন। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়ায় নতুন এই ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে।