গাজায় দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভের ডাক হামাসের
গাজা উপত্যকায় চরম খাদ্য সংকট ও অনাহারের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে তিন দিনব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে জানা গেছে, ‘অনাহারের অপরাধ বন্ধ করো’ স্লোগানকে সামনে রেখে হামাস ২৫, ২৬ ও ২৭ জুলাই বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে।
হামাসের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গাজায় এখন মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে। শিশু, মা ও বৃদ্ধদের চেহারায় দুর্ভিক্ষের নির্মম ছাপ স্পষ্ট।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “বিশ্বব্যাপী নীরবতা ও কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে এই আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, ওই তিন দিনের মধ্যে যদি বিশ্বশক্তিগুলো গাজায় চলমান অবরোধ ভাঙতে এবং দুর্ভিক্ষ রোধে কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে তারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে।
এদিকে, গাজায় ভয়াবহ খাদ্য সংকটের বিষয়ে শতাধিক আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। এসব সংস্থা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য সরবরাহ প্রবেশ করতে পারছে না। এমনকি ত্রাণকর্মীরাও তাদের পরিবারকে খাওয়াতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছেন।
তারা জানিয়েছে, “ইসরায়েলের লাগাতার অবরোধের ফলে খাদ্য, ওষুধ ও জরুরি সামগ্রী সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক সংস্থার কর্মীরা নিজের চোখের সামনে সহকর্মীদের অনাহারে মারা যেতে দেখছে।”
ইসরায়েল সরকার যদিও গাজায় খাদ্য সংকটের দায় অস্বীকার করেছে, তবে তারা স্বীকার করেছে যে সহায়তার পরিমাণ কমে গেছে। তাদের দাবি, খাদ্য মজুদ আছে, কিন্তু ত্রাণ সংস্থাগুলো তা বিতরণে ব্যর্থ হচ্ছে।
সংঘাতপূর্ণ এই পরিস্থিতিতে গত কয়েক সপ্তাহে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ৮০০-রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের বেশিরভাগই প্রাণ হারিয়েছেন গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে মোতায়েন সেনাদের গুলিতে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা জিএইচএফের বিতরণ পদ্ধতির নিরপেক্ষতা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে।
প্রায় ২১ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ইতোমধ্যে ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এবার প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, গাজায় মানুষ এখন সত্যিকার অর্থেই অনাহারে মারা যাচ্ছে।