২০ শিশুকে বাঁচিয়ে মৃত্যুর কোলে শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরী
২০ জন শিশুকে মৃত্যুর মুখ থেকে উদ্ধার করে নিজেই জীবন হারিয়েছেন উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাহসী শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরী (৪৬)। প্রতিদিনের মতোই স্কুল ছুটির পর তিনি শিক্ষার্থীদের হাতে ধরে স্নেহভরে অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে দিতেন। কিন্তু সোমবারের দুর্ঘটনাটি ছিল ভিন্ন। বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান স্কুল প্রাঙ্গণে বিধ্বস্ত হলে চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় মেহেরীন চৌধুরী দূরে অবস্থান করলেও আগুন দেখে দৌড়ে ছুটে আসেন এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একে একে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থীকে নিরাপদে বের করে আনেন। নিজের শরীর তখন আগুনে ঝলসে যাচ্ছিল, তবুও তিনি থামেননি।
এই সাহসিকতার মূল্য তাঁকে নিজের জীবন দিয়ে দিতে হয়েছে। পরে মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান জানান, মেহেরীন চৌধুরীর শরীরের শতভাগ পুড়ে গিয়েছিল। তাঁকে দ্রুত আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় তিনি দ্রুত শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম থেকে বের করে আনেন এবং নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেন। এসময় নিজের শরীর আগুনে ঝলসে গেলেও তিনি পরোয়া করেননি। এক অভিভাবক জানান, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরীর আত্মত্যাগের কারণেই প্রায় ১৫-২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। তাঁর এই আত্মোৎসর্গ জাতির জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।