গোপালগঞ্জের মরদেহগুলো প্রয়োজনে কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহতদের মরদেহ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে নিহতদের দাফনকৃত মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হবে, যাতে প্রকৃত কারণ ও ঘটনার পেছনের সত্য উদঘাটন সম্ভব হয়।
শনিবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য) দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, গোপালগঞ্জের ওই ঘটনায় নিহতদের মরদেহ আইন অনুযায়ী ময়নাতদন্তের জন্য সংরক্ষণ করা হয়নি, কারণ পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে মরদেহ নিজ উদ্যোগে নিয়ে গিয়ে দাফন করেন। ফলে, ঘটনাস্থলে নিহতদের মৃত্যুর কারণ বা ঘটনার প্রকৃত প্রকৃতি সম্পর্কে ফরেনসিক বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়নি।
তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, “যদি পরিস্থিতি ও তদন্তের প্রয়োজনে দেখা যায় যে ময়নাতদন্ত ছাড়া সত্য উদঘাটন অসম্ভব—তাহলে মরদেহ উত্তোলন করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ময়নাতদন্ত করানো হবে।”
এছাড়াও, গোপালগঞ্জের এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো ব্যর্থতা ছিল কি না, তা যাচাই করতে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এই কমিটি ঘটনার বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রশাসনের কোনো গাফিলতি বা দায় থাকলে তা নিরপেক্ষভাবে খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “প্রত্যেকটি প্রাণের মূল্য আছে। তাই কোনো ঘটনায় যদি কোনো সন্দেহ বা অভিযোগ থাকে, সেটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হবে। সরকার ন্যায়বিচারের বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন।”
এসময় তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নবনির্মিত থার্ড টার্মিনাল পরিদর্শন সম্পর্কেও কথা বলেন। তিনি জানান, নতুন টার্মিনালটি চালুর আগে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ এবং ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু করতে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে টার্মিনাল উদ্বোধনের নির্দিষ্ট তারিখ বা সময়সূচি সম্পর্কে তার কাছে কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই বলে জানান তিনি।
সামগ্রিকভাবে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই বক্তব্য সরকার ও প্রশাসনের অবস্থানকে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছে যে, গোপালগঞ্জের সংঘর্ষের ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।