সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৯৪০
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের সুইদা প্রদেশে সম্প্রতি ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪০ জনে। সংঘাতটি মূলত দ্রুজ সম্প্রদায়ের মিলিশিয়া যোদ্ধা এবং সুন্নি বেদুইন উপজাতিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, যা অল্প সময়ের মধ্যেই ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়।
ফ্রান্সভিত্তিক বার্তা সংস্থা এএফপি এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (SOHR) জানায়, এই সংঘাতে নিহতদের মধ্যে ৩২৬ জন দ্রুজ মিলিশিয়া যোদ্ধা এবং ২৬২ জন সাধারণ দ্রুজ বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। এদের মধ্যে ১৮২ জনকে সরাসরি হত্যা করেছে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদস্যরা।
এছাড়া সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীরও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সংঘর্ষে ৩১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি সুন্নি বেদুইন উপজাতির ২১ জন সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন। সহিংসতার মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর এক হামলায় সিরিয়ার সেনাবাহিনীর আরও ১৫ জন সদস্য নিহত হন। এই হামলাটি চালানো হয়েছিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের সামরিক সদর দপ্তরের ওপর, যা সংঘাতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়।
এই সহিংস পরিস্থিতি সামাল দিতে সিরিয়ার সরকার অবশেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সিরিয়া এবং ইসরায়েল উভয় দেশই এই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সিরিয়া-বিষয়ক মার্কিন প্রতিনিধি টম ব্যারাক জানান, সিরিয়ার নেতা আহমেদ আল-শারা এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তুরস্ক ও জর্ডান এই শান্তিচুক্তিকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সুইদা অঞ্চলের সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে পরিস্থিতি যে এখনো ভঙ্গুর, তা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষই স্বীকার করছে। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন সিরিয়ার উপর, এবং শান্তি প্রক্রিয়া কতটা বাস্তবায়ন হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।