যুক্তরাষ্ট্র-জাপানের 'বৃহৎ' বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করলেন ট্রাম্প
বিশ্বের দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে একটি ‘বৃহৎ’ বাণিজ্য চুক্তি, যাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিহাসের অন্যতম বড় চুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে চুক্তিটি ঘোষণা করেন ট্রাম্প, বলেন, “এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক ও গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই চুক্তির জন্য কাজ করেছি।”
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চুক্তির আওতায় জাপান যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এবং মার্কিন কৃষিপণ্য, গাড়ি ও অন্যান্য পণ্যের জন্য জাপানি বাজার খুলে দেবে। ট্রাম্প জানান, জাপান ১৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপেও সম্মত হয়েছে।
জাপানের প্রধান বাণিজ্য আলোচক রিওসেই আকাজাওয়া সামাজিক মাধ্যমে বলেন, তিনি হোয়াইট হাউসে আলোচনা শেষে “মিশন সম্পন্ন” করেছেন। যদিও পুরো চুক্তির বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি, সংবাদমাধ্যমগুলো বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে।
চুক্তির আগে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা ছিল। চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে ১ আগস্টের মধ্যে সমঝোতা না হলে জাপানি পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এপ্রিলে তিনি ২৪ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দিয়েছিলেন, যেটি পরে ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়।
‘লিবারেশন ডে’ নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে কিছু দেশের ওপর বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করেছিল, যার প্রভাব পড়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। জাপানের সঙ্গে এই চুক্তি সেই উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চুক্তির খবরে জাপানের শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে যায়, এবং টয়োটা, নিশান ও হোন্ডার শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।
এছাড়াও ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও নতুন একটি বাণিজ্য চুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হতে পারে এবং আরও কয়েকটি চুক্তির আলোচনাও চলমান।
জাপানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রেক্ষাপটেও এই চুক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি নির্বাচনে পরাজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি উচ্চকক্ষের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। চুক্তি নিয়ে ইশিবা বলেছেন, “আমরা পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করবো না।”