বিমান দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষকের বিবরণে ভয়াবহ মুহূর্তের চিত্র
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় আহত এক শিক্ষক সেই বিভীষিকাময় ঘটনার স্মৃতিচারণ করেছেন। তাঁর মুখ, কান এবং হাত পুড়ে গেছে, শ্বাস-প্রশ্বাসেও কষ্ট হচ্ছিল। তিনি বলেন, “ঘটনাটি এতটাই হঠাৎ ঘটেছে যে কারও কিছু বোঝার বা প্রতিক্রিয়া দেখানোর সময়ই ছিল না। স্কুল ছুটির সময় শিক্ষার্থীরা গেটের কাছে অপেক্ষা করছিল, হঠাৎই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে চারপাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়, শুধু আগুন আর ধোঁয়া দেখছিলাম।”
তিনি দ্রুত ওয়াশরুমে গিয়ে একটি ভেজা কাপড় দিয়ে নিজের মুখ ঢাকেন এবং আশপাশের শিশুদেরও তা করতে বলেন। অনেক শিক্ষার্থীর জামায় তখন আগুন ধরে গিয়েছিল। তিনি তাদের নিচু হয়ে থাকতে বলেন এবং সাহস জোগাতে চেষ্টা করেন।
এই শিক্ষকের সহায়তায় তিনজন শিক্ষার্থী বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়। তাদের একজনের শরীরের চামড়া উঠে গিয়েছিল। আহত শিক্ষক বলেন, “আমি আমার পরনের কাপড় খুলে তাকে মুড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমি নিজেও ব্যথায় ছটফট করছিলাম, কিন্তু নিজেকে শান্ত রেখে বাচ্চাদের সাহস জোগানোর চেষ্টা করেছি।”
বিমানটি সোমবার দুপুর ১টার পর স্কুলের একটি ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে আগুন লেগে যায়। ওই ভবনে স্কুলপড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী ছিল, যাদের অনেকে হতাহত হয়েছে। দুর্ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান শুরু করে। উত্তরাসহ আশপাশের এলাকা থেকে আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে বিজিবি, সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধারকাজে যোগ দেয়। হেলিকপ্টারে আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই দুর্ঘটনায় অন্তত ১৯ জন নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনাটি দেশের অন্যতম মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।