
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন মালয়েশিয়া সফরে অভিবাসন ও বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি জানান, আগামীকাল (সোমবার) তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। এই সফরে একাধিক সমঝোতা স্মারক সই হবে এবং মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে। সফরের মূল আলোচ্য বিষয় হবে অভিবাসন, দ্বিতীয় গুরুত্ব পাবে বিনিয়োগ।
রবিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরে এমন সমঝোতা হবে যাতে মালয়েশিয়া সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মী বাংলাদেশ থেকে নিতে পারে। পাশাপাশি মালয়েশিয়ার শীর্ষ কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রেস সচিব আরও জানান, আগামী ১২ আগস্ট মালয়েশিয়ায় একটি বিজনেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। ১৩ আগস্ট মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি কেবাংসান (ইউকেএম) প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করবে, যেখানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম উপস্থিত থাকতে পারেন। ১২ আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও হবে। আশা করা হচ্ছে, এ বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক শাহ আসিফ রহমান জানান, ১১ থেকে ১৩ আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টা উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে মালয়েশিয়া সফর করবেন। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন।
সফরের প্রথম দিনে প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড অব অনার প্রদান করবেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল। ১২ আগস্ট পুত্রজায়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা ও একাধিক সমঝোতা স্মারক সই হবে। সম্ভাব্য চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, এলএনজি ও পেট্রোলিয়াম সরবরাহ ও অবকাঠামো উন্নয়ন, জ্বালানি খাতে সমন্বয়, গবেষণা ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা, হালাল ইকোসিস্টেম উন্নয়ন, কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ এবং উচ্চশিক্ষা সহযোগিতা।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর প্রথম বিদেশি সরকার প্রধান হিসেবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। প্রায় এক দশক পর এ সফর হয়।
শাহ আসিফ রহমান জানান, দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলন, রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজ, ব্যবসায়িক ফোরাম এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনায় নতুন কর্মী ও পেশাজীবী নিয়োগ, শ্রমিকদের কল্যাণ, গভীর সমুদ্রের সম্পদ ব্যবহার, কৃষি ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।