রাশিয়ার হয়ে কাজ করা দুই গুপ্তচরকে হত্যা করার দাবি করেছে ইউক্রেন। গতকাল রোববার এ তথ্য জানিয়েছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ। সংস্থার প্রধান ভাসিল মালিউক এক ভিডিও বার্তায় জানান, রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির হয়ে কাজ করা দুই গুপ্তচরকে শনাক্ত করার পর গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তারা বাধা দিলে তাদের হত্যা করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার কিয়েভের একটি পার্কিং লটে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা কর্নেল ইভান ভোরোনিচকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকালে দক্ষিণ কিয়েভের হোলোসিভস্কি এলাকায় এক ব্যক্তি গাড়ি থেকে নামার সময় হামলাকারী কাছে এসে তাকে কয়েকবার গুলি করে পালিয়ে যায়। রয়টার্স ভিডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
এসবিইউ জানিয়েছে, হত্যার আগে রুশ গুপ্তচররা কর্নেল ভোরোনিচের ওপর নজরদারি করছিল। পরে তারা আত্মগোপন করার চেষ্টা করলেও পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থার যৌথ অভিযানে তাদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। ইউক্রেনের পুলিশ বলছে, নিহত দুই গুপ্তচর ভিনদেশি নাগরিক হলেও বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। মস্কো এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার হামলা শুরুর পর এসবিইউ শুধু অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নয়, রাশিয়ার ভেতরে নাশকতা ও গুপ্তহত্যাতেও সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। সংস্থার অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বিবিসিকে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রুশ জেনারেল ইগর কিরিলভকে হত্যা এবং গত এপ্রিলে মস্কোতে গাড়ি বোমা হামলায় জেনারেল ইয়ারোস্লাভ মোস্কালিককে হত্যার পেছনেও এসবিইউর হাত রয়েছে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা দায় স্বীকার করেনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, সম্প্রতি তারা সবচেয়ে বড় রুশ বিমান হামলার মুখোমুখি হয়েছেন। জাতিসংঘ বলছে, জুন মাসে ইউক্রেনে গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেসামরিক প্রাণহানি ঘটেছে।
এদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। রুশ সেনারা পূর্ব ইউক্রেনে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে এবং কুরস্কের বেশিরভাগ এলাকা পুনর্দখল করেছে। তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।