দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার দীর্ঘদিনের সীমান্তবিরোধ ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে দুই দেশের সেনাবাহিনী পরস্পরের দিকে গুলি ছোড়ে। উভয় দেশই একে অপরকে প্রথম হামলার জন্য দায়ী করছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে থাইল্যান্ড ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের একটি মোতায়েন করেছে এবং এ হামলায় কমপক্ষে দুইজন থাই বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। থাই সেনাবাহিনীর উপ-মুখপাত্র রিচা সুকসুয়ানন জানান, ‘আমরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে বিমানশক্তি ব্যবহার করেছি।’ তবে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে এ হামলা নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য আসেনি।
সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বৃহস্পতিবার ভোরে, বিতর্কিত ‘তা মোয়ান থম’ মন্দির এলাকাকে ঘিরে। ব্যাংকক থেকে প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার দূরের এই সীমান্তে গোলাগুলি শুরু হলে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায়। থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশের প্রশাসনিক প্রধান সুতথিরত চরোয়েনথানাসাক জানিয়েছেন, ‘কম্বোডিয়ার ছোড়া গোলাবারুদ বেসামরিক ঘরবাড়িতে পড়েছে। এতে দুইজন নিহত ও ৪০ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেন জানান, থাই হামলায় তাদের দুটি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, সংঘর্ষে কম্বোডিয়ার অন্তত দুই সেনা ও তিনজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন এবং একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচ বছর বয়সী একটি শিশুও রয়েছে।
থাই দূতাবাস তাদের নাগরিকদের কম্বোডিয়া ছাড়তে বলেছে। এর আগে থাইল্যান্ড তাদের রাষ্ট্রদূতকে কম্বোডিয়া থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে এবং ব্যাংককে নিযুক্ত কম্বোডিয়ান রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। গত সপ্তাহে সীমান্তে স্থাপিত একটি মাইন বিস্ফোরণে থাই সেনাবাহিনীর এক সদস্য পা হারান। থাই সেনারা অভিযোগ করে, মাইনটি সম্প্রতি পুঁতে রাখা হয়েছিল, তবে কম্বোডিয়া বলছে এটি পুরনো যুদ্ধকালীন মাইন।
প্রসঙ্গত, ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সীমান্তের বিভিন্ন অনির্ধারিত অংশ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহুদিন ধরেই বিরোধ চলছে। ২০১১ সালে এক সপ্তাহের সংঘর্ষে কয়েকজন নিহত হন। মে মাসে এক কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হওয়ার পর উত্তেজনা নতুন করে বাড়তে থাকে, যা এবার পূর্ণমাত্রার সশস্ত্র সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে।
সূত্র : রয়টার্স