যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আগামী ৫০ দিনের মধ্যে রাশিয়া যদি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তিচুক্তিতে না আসে, তাহলে দেশটি মারাত্মক শুল্কের মুখে পড়বে। সোমবার ওয়াশিংটনে ন্যাটো প্রধান মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ন্যাটোর মাধ্যমে ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করা হবে, যাতে তারা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারে।
ন্যাটো প্রধান রুটে জানিয়েছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনকে তাদের নিজস্ব প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সরবরাহ করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সেইগুলোর পরিবর্তে নতুন প্রতিস্থাপন পাঠাবে। এই চুক্তির আওতায় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদও অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যদিও বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার কথা হয়েছে এবং সমর্থনের জন্য তিনি তাকে ধন্যবাদ জানান। জেলেনস্কি বলেন, “আমরা এমন সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছি যাতে রুশ হামলা থেকে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং আমাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়।”
ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, শান্তিচুক্তি না হলে রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করা দেশগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ ‘সেকেন্ডারি ট্যারিফ’ আরোপ করা হবে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যদি ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখে, তবে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক বসানো হবে, যাতে মার্কিন ব্যবসায়ীরা অন্য দেশ থেকে পণ্য কিনতে বাধ্য হয়। এর ফলে ভারতের আয় কমবে এবং রাশিয়ার অর্থনীতিও বড় ধাক্কা খাবে, কারণ তাদের রপ্তানির ৬০ শতাংশ ও রাজস্বের এক-তৃতীয়াংশ আসে তেল-গ্যাস থেকে।
তবে ট্রাম্পের এ ঘোষণার পর মস্কো স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক উর্ধ্বমুখী হয়েছে। এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার প্রথম ঘোষণা। তিনি আরও বলেন, “পুতিন একজন কঠোর মানুষ। ওবামা, বাইডেন, বুশ, ক্লিনটন – সবাইকে তিনি ভুল ধারণা দিয়েছেন, তবে আমাকে নয়।” যদিও ট্রাম্প একপর্যায়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউক্রেনও আক্রমণের জন্য আংশিকভাবে দায়ী।
এ বছরের শুরুতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দুটি শান্তি আলোচনা হয়েছিল, কিন্তু পরে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। মস্কো এর দায় কিয়েভের ওপর চাপিয়েছে। জেলেনস্কি বর্তমানে কিয়েভে যুক্তরাষ্ট্রের দূত কিথ কেলগের সঙ্গে বৈঠক করে ট্রাম্পের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। মস্কোর পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে রুশ বিশ্লেষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।