চোটের ঝুঁকি ঠেকাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ
সাম্প্রতিক কয়েক মৌসুম ধরে চোট যেন পিছুই ছাড়ছে না রিয়াল মাদ্রিদের। গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বারবার ইনজুরিতে পড়া ক্লাবটির কৌশলগত পরিকল্পনা ও আর্থিক অবস্থার ওপর বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাই নতুন কোচিং স্টাফের অধীনে নতুন মৌসুম শুরুর আগে আরও আধুনিক প্রযুক্তির দ্বারস্থ হয়েছে ইউরোপের সফলতম এই ক্লাব।
স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা জানিয়েছে, চোট প্রতিরোধে রিয়াল মাদ্রিদ এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে। শুধুমাত্র রিয়ালই নয়, ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ম্যানচেস্টার সিটি, বায়ার্ন মিউনিখ, ফ্লামেঙ্গো এবং পালমেইরাসের মতো শীর্ষ ক্লাবগুলোর মধ্যেও এই প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে।
এআই-ভিত্তিক এই প্রযুক্তি খেলোয়াড়দের দৈনিক অনুশীলন, ঘুমের মান, পুষ্টি, পূর্ববর্তী ইনজুরি, মাঠে পারফরম্যান্স এমনকি মানসিক অবস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য ইনজুরির আগাম পূর্বাভাস দিতে পারে। তথ্য সংগ্রহে ব্যবহার করা হয় ক্যামেরা, সেন্সর ও ট্র্যাকিং ডিভাইস—যার মাধ্যমে তৈরি হয় একটি সতর্কতা সিস্টেম।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, গড়ে একজন খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়ে তিন থেকে ছয় সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকলে, শুধুমাত্র দলের শক্তিই কমে না, ক্লাব আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেজন্য আধুনিক ফুটবলে ইনজুরি প্রতিরোধ এখন শুধু চিকিৎসা নয়, বরং মৌসুমের লক্ষ্যে পৌঁছানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোস এফসির মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর ডা. রড্রিগো জোগাইব এ বিষয়ে বলেন, “আমরা প্রতিদিন খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করি। থার্মোগ্রাফি, ঘুমের মান, ব্যথার তীব্রতা, হাইড্রেশন, ওজন, এমনকি জিপিএস ডেটা পর্যন্ত বিশ্লেষণ করে ক্লান্তির একটি অ্যালগরিদম তৈরি করা হয়। এর মাধ্যমে ইনজুরির ঝুঁকি আগেভাগেই শনাক্ত করা সম্ভব হয়।”
চোটে জর্জরিত রিয়াল মাদ্রিদের জন্য এআই প্রযুক্তির এই ব্যবহার নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় খেলোয়াড়দের সুস্থ রাখা ও মৌসুমজুড়ে ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই এখন ক্লাবের অন্যতম অগ্রাধিকার।