
FILE PHOTO: Israel's Prime Minister Benjamin Netanyahu addresses the 79th United Nations General Assembly at U.N. headquarters in New York, U.S., September 27, 2024. REUTERS/Eduardo Munoz/File Photo
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজা দখলের নতুন সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে প্রবল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সেনাবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডের সতর্কবার্তা ও অসন্তোষের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
১০ ঘণ্টাব্যাপী নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়, যা যুদ্ধের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও এটি গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের লক্ষ্যে নেয়া পদক্ষেপ, নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে ‘অধিকার’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির বলেন, গাজার পূর্ণ দখল একটি বিপজ্জনক ফাঁদ হতে পারে এবং এতে জীবিত জিম্মিদের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। ইসরায়েলি মিডিয়া মারিভ জানায়, বিস্তৃত অভিযান চলাকালে অধিকাংশ বা সম্ভবত সব জিম্মি নিহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জিম্মিদের পরিবারগুলো যুদ্ধ বন্ধ করে হামাসের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছে। জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ ইসরায়েলি নাগরিক ৫০ জন জিম্মিকে মুক্তির জন্য চুক্তি করতে চান, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হয়।
নেতানিয়াহুর এই যুদ্ধবিধ্বংসী পদক্ষেপ অনেকের কাছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হচ্ছে। তার জোট সরকারের উগ্র-জাতীয়তাবাদী মন্ত্রীরা, যেমন ইতামার বেন গভির ও বেজালেল স্মোটরিচ, যুদ্ধ বন্ধ হলে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। তারা গাজার ফিলিস্তিনিদের স্বেচ্ছাসেবী স্থানান্তরের পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন, যা আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং ইসরায়েলকে তা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে নেতানিয়াহুর অবস্থান বদলের সম্ভাবনা কম। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনও এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেনি।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল গাজার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়, তবে সেখানে শাসক হিসেবে থাকতে চায় না। তিনি উল্লেখ করেন, এই দায়িত্ব আরব শক্তির হাতে দেওয়া হবে, যদিও কোন দেশ বা বাহিনী তা দায়িত্ব নেবে, তা স্পষ্ট করেননি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নতুন দখল পরিকল্পনাটি গাজা সংকটকে আরও জটিল ও রক্তক্ষয়ী করে তুলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে রাজনৈতিক অস্থিরতা, মানবিক বিপর্যয় এবং আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা ইসরায়েলের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
সূত্র: বিবিসি