নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা নিয়ে আগাম বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানিয়েছেন, আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। শনিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ১৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান তিনি।
বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন তিনি চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে ঘোষণা দেবেন।” সমকালকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আরও কয়েকটি দলের নেতারাও এমন দাবির কথা বলেন। কেউ বলেছেন, তিন-চার দিনের মধ্যে, কেউ বলেছেন ৫ আগস্টের আগেই ঘোষণা আসবে।
যদিও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও প্রেস উইং এসব মন্তব্য নিয়ে কোনো অবস্থান নেয়নি। এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি, কয়েক দিনের মধ্যে সময় জানাব।’
বৈঠকে গোপালগঞ্জের সহিংসতা, বিমান দুর্ঘটনা ও সাম্প্রতিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। ড. ইউনূস বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য সংগ্রহ দুর্বল, পুলিশ-প্রশাসনও পুরোপুরি সক্রিয় নয়। রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলার ওপর জোর দেন তিনি।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, নির্বাচনে বাধা দিতে চায় একটি ‘পতিত শক্তি’। তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে সব ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “যখনই নির্বাচন এগিয়ে আসে, তখনই ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কিন্তু গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা আর থামানো যাবে না।”
বৈঠকে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দলের নেতারা সমকালকে বলেন, সবাই প্রধান উপদেষ্টাকে নির্দিষ্ট সময় ঘোষণার অনুরোধ করেছেন। বাসদের মাসুদ রানা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ অনেকেই তিন-চার দিনের মধ্যে সময় ঘোষণার কথা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে একইদিনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে হেফাজতে ইসলামের প্রতিনিধি দল। শাপলা চত্বর ঘটনার ক্ষতিপূরণ, মামলা প্রত্যাহার ও আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে ছিলেন হেফাজতের শীর্ষ নেতারা, পাশাপাশি সরকারের ধর্ম, জ্বালানি ও শিল্প উপদেষ্টারাও উপস্থিত ছিলেন।
সব মিলিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা—নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দেশকে দ্রুত স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে নেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।