কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীত সব ইউনিটের কার্যক্রম স্থগিত করলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই দেশের আলোচিত সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারাদেশের সকল কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে। রোববার (১৪ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি রিফাত রশিদ বলেন, “অর্গানোগ্রামের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীত সারাদেশের সকল কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।” তিনি অভিযোগ করেন, সংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করে নাম-বেনামে নানা অপকর্ম ও অনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড সংগঠনের নীতিমালার পরিপন্থী বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, “আমরা আত্মপ্রকাশের দিনই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলাম, সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কেউ অনৈতিক কাজে জড়ালে তা বরদাশত করা হবে না।” যারা এমন অপকর্মে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এই সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়ে, যখন সংগঠনের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার গুলশানে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম, সাদাব এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ-কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর সংগঠন থেকে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “চাঁদাবাজির ঘটনায় আশেপাশের মানুষদের এমন অবাক হওয়ার ভান করাটা হাস্যকর। এই প্রথম ধরা পড়েছে—তাদের শিকড় অনেক গভীরে।”
এছাড়া সংগঠনের মুরাদনগর উপজেলার মুখপাত্র খাদিজা আক্তার কেয়া সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে পদত্যাগ করেন। তিনি লেখেন, “যার জন্য করলাম চুরি, সেই বলে চোর! আজকের পর থেকে এই আন্দোলনের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”
সাম্প্রতিক এসব কেলেঙ্কারি ও বিতর্কিত ঘটনায় সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতারা জরুরি ভিত্তিতে সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনর্মূল্যায়ন ও নিয়ন্ত্রণে আনতে এ পদক্ষেপ নিলেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা শিগগিরই নতুন করে নির্ধারণ করা হবে বলে জানান রিফাত রশিদ।