দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রতিশ্রুতি থাকলেও উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক আসন বণ্টন (পিআর পদ্ধতি) চায় না বিএনপি। বরং সংসদের নিম্নকক্ষের আসন সংখ্যার অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে অবস্থান জানাবে দলটি। বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান। উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা।
বৈঠক সূত্র জানায়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আসন্ন সংলাপে বিএনপি জানাবে, ক্ষমতায় গেলে ৩১ দফার আলোকে দ্বিকক্ষ সংসদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। উচ্চকক্ষ গঠিত হবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে। তবে কমিশন স্বপ্রণোদিতভাবে উচ্চকক্ষ বাতিলের প্রস্তাব করলে বিএনপি এর বিরোধিতা করবে না।
এর আগে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে সংসদের উচ্চকক্ষের আসন সংখ্যা ১০০ করার প্রস্তাবে বেশিরভাগ দল একমত হলেও নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ অধিকাংশ দল জেলা-সিটি করপোরেশনভিত্তিক নির্বাচন প্রস্তাব নাকচ করে। বিএনপি নিম্নকক্ষের আসন অনুপাতে বণ্টনের পক্ষে মত দেয়, আর জামায়াত, এনসিপিসহ ২১টি দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে।
নারী আসন দ্বিগুণ করে ১০০ করার বিষয়েও একমত হলেও নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মতভেদ রয়েছে। বিএনপি জানায়, বিদ্যমান অনুপাতেই নারী আসন বণ্টন হবে। দলের প্রস্তাব অনুযায়ী, ধাপে ধাপে সরাসরি নির্বাচন হবে। ত্রয়োদশ সংসদে ১৫টি ও চতুর্দশ সংসদে ৩০টি আসনে সরাসরি নির্বাচন চায় বিএনপি।
বৈঠকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও আলোচনা হয়। বিএনপি মনে করে, প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা না থাকলে সংসদীয় গণতন্ত্র কার্যকর হবে না। তবে এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “যারা পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য অসৎ। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।”