ইন্টারনেট বন্ধের ক্ষমতা বাতিলের নির্দেশ, টেলিযোগাযোগ আইনে আসছে বড় পরিবর্তন
ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার ক্ষমতা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। টেলিযোগাযোগ আইনের সংশোধনের মাধ্যমে এই ক্ষমতা তুলে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি)। একইসঙ্গে, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় আড়ি পাতার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণের কথাও বলা হয়েছে।
সোমবার বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারীর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। চিঠিতে টেলিযোগাযোগ আইনের একটি সংশোধিত খসড়া তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়, যা আগামী সপ্তাহের মধ্যেই মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টেলিযোগাযোগ আইন সংশোধনের একটি খসড়া করা হয়েছিল, যেখানে ইন্টারনেট বন্ধের বিধান এবং আড়ি পাতার ক্ষমতা বহাল রাখা হয়েছিল। সেই খসড়ায় সরকারের নিরাপত্তার অজুহাতে ইন্টারনেট সাময়িকভাবে বন্ধ করার সুযোগ রাখা হয়েছিল। তবে চলমান অন্তর্বর্তী সরকার এসব বিধান থেকে সরে এসে নাগরিক অধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে আইন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে।
বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় পাঁচ দিনের ইন্টারনেট বন্ধসহ অতীতে বিএনপির জনসভাগুলোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার ঘটনা তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়। অভিযোগ রয়েছে, এসব সময় সরকার টেলিযোগাযোগ আইনের অপব্যবহার করেছিল।
নতুন নির্দেশনায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ২০০১ সালের বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ আইন সংশোধন ও যুগোপযোগীভাবে পরিমার্জনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সংশোধিত আইনে ইন্টারনেট স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার ওপর জোর দেওয়া হবে।