
আগামীকাল ঘোষিত হবে ভোটের রোডম্যাপ ও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’
আগামীকাল (৫ আগস্ট) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে ভোটের রোডম্যাপ এবং বহু প্রতীক্ষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকাল ৫টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন দেশের সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। সূত্র জানায়, লন্ডন বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন অক্টোবরের যেকোনো দিন আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণা করবে এবং নির্দিষ্ট তারিখ পরে জানানো হবে।
অনুষ্ঠানকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মানিক মিয়া এভিনিউয়ে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের সমাগম এবং নির্বাচনের প্রস্তুতিপর্ব নিয়ে এ আলোচনা হয়। বৈঠকে আইজিপি বাহারুল আলম, এসবি প্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা অভিমুখী মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ থেকে বিশেষ ট্রেন পরিচালিত হবে। এসব ট্রেনে কেউ বিনা টিকিটেই যাতায়াত করতে পারবেন। একইসঙ্গে ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং জয়দেবপুর রুটের কমিউটার ট্রেনগুলোকেও ফ্রি করা হয়েছে। ট্রেন যাত্রা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলওয়ে পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) মোতায়েন করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার যমুনা বাসভবনের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত ৭০০ সদস্যের এপিবিএন দায়িত্ব পালন করবে।
জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ার কিছু বিষয়ের ওপর শুরুতে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আপত্তি থাকলেও, প্রধান উপদেষ্টার মধ্যস্থতায় তারা মতৈক্যে পৌঁছেছে। ঘোষণাপত্রে এখন সব রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত স্বাক্ষর থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমদ বলেন, “নির্বাচন এবং জুলাই সনদ ঘিরে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, তা আগামীকাল বাস্তবে প্রতিফলিত হবে।”
রেলওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি সরদার তমিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, বিভাগীয় শহরগুলো থেকে যাত্রী আনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্রেনের সময়সূচি শিগগিরই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করবে।
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে, “এক বছর পর আবার ফিরে এসেছে ছত্রিশ জুলাই। এদিন জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে বহু প্রতীক্ষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’। দিনব্যাপী আয়োজন থাকছে মানিক মিয়া এভিনিউজুড়ে। সবাই পরিবার-পরিজন নিয়ে আসুন এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে। এটি আমাদের ইতিহাস, আমাদের গৌরব।”
ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ধাপের আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়েছে, সেগুলো ইতোমধ্যে লিখিত আকারে দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের বিষয়গুলোও দ্রুত পাঠানো হবে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, “জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষের উপস্থিতিতে এই সনদ জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।